ফরেক্স ট্রেডিং এর একটি সিম্পল ও সত্য পথ-
(এডভান্স ট্রেডারদের জন্য)
১ম পর্বঃ-
ট্রেডারদের সবচেয়ে বড় ভুল হল তারা ফরেক্স মার্কেটে অনেক কঠিনভাবে প্রচুর সময় ব্যয় করেন এবং তারা দিনে বা সপ্তাহে অনেক বেশী ট্রেড করেন এবং চার্টের সাথে লেগে থাকেন। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে মার্কেট এখন থেকে পরের ধাপে কোথায় যাবে তা বলতে পারবে। তারা প্রচুর সময় ব্যায় করতেই থাকে এবং লজ ট্রেডের পরিমান ও বাড়তেই থাকে।
আমার একটি আদর্শ রাস্তা আছে ফরেক্স ট্রেডিং এর জন্য- আর তা হল ঃ-
আমার প্রতিটি ট্রেড এর জন্য আমাকে জানতে হবে যে, কেন ও কখন মার্কেট আমার দিকে যাবে – এবং গেলে কত পিপস যাবে। সে সময় ট্রেডিং এ বসি, ট্রেড প্লেজ করি, আর প্রফিট নিয়ে বেড়িয়ে আসি। সবোর্চ্চ ট্রেডটি ৪-৫ ঘন্টা হতে পারে- অবস্থা ভেদে ১৫ দিন ও হতে পারে। সপ্তাহে ৩-৪ বা মাসে ১০-১৫ টি ট্রেড এর বেশী করি না। আর মার্কেট এর প্রাইজ ও সর্বদা কোথায় আছে তাও হিসাব রাখি না। এক কথায় আমি একটি নিদিষ্টি শিডিউল অনুযায়ী ট্রেড করি আর তা সম্ভব শুধুমাত্র নিউজ এর উপর ভিত্তি করে।
ডিসিপ্লিনঃ-
*** শিডিউল টেডিং টাইম।
*** লজ ট্রেড কমিয়ে আনি।
*** রিস্ক মেনেজ করে চলি।
*** ফলে হাই প্রফিট পেয়ে থাকি।
*** ফরেক্স চার্ট এর জন্য কম সময় দেই।সময় বেশী দেই ঐ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর।
আপনার যা অভিজ্ঞতা আছে তা থেকে নিজের মনের মধ্যে হিসেব করে নেন যে আপনি যে সময় গুলো পার করেছেন বিভিন্ন রকম টেকনিকাল বেস এর জন্য তার ফল কি তা আপনার ব্যালেন্স উত্তর দিয়ে দিবে।
আপনি যে ভাবেই ট্রেড করে না কেন আপনাকে অবশ্যই নিউজ ও তার পলিচি আপনাকে প্রফিট এনে দেবেই। Join &
অধ্যায়ঃ ১
যখন আমি প্রথম ফরেক্স ট্রেড শুরু করি, তখন প্রথমে আমার মনে একটি প্রশ্নই ঘুরত, কেন মার্কেট আপ/ডাউন করে?
সম্পুর্ন ফরেক্স জগতের সকল ট্রেডার রা এর উত্তর দেন- তা হল টেকনিক্যাল। শুধু তাই নয়- সবাই Fibonacci, কিছু MACD আর Slow Stochastic দিয়ে বা তাদের সম্মিলিত একটা সিষ্টেম দিয়ে বিভিন্ন রকম মাপযোগ করে ট্রেড করে থাকেন।
কিন্তু বাস্তব টা অন্য রকম দেখলাম। একমাএ একটি কারনেই মার্কেট মুভ করে আর তা হল নিউজ।
কিছুদিন আগেও আমার মনে পরে- যখন আমি প্রতিদিন ২৪ টা ট্রেড করতাম ১৬ ঘন্টায় সপ্তাহে ৫ দিনই। এটা আমার কাছে প্রফিট করার থেকে অনেক একসাইটিং মনে হত। ফলাফল ৫ বার আমাকে একাউন্টে আবার ডলার ঢুকাতে হয়েছিল।
তারপর
আমি মনে মনে প্রশ্ন করতাম বাস্তবেই কি কোথাও কোন মেথোড আছে যা সবসময় লাভ দিবে নাকি এটা একটা গুজব?
এই পশ্ন মাথায় আসতে আসতে অনেক টাকা ও সময় আর এনার্জী লজ করে ফেলেছি।
সব কিছু বন্ধ করে দিলাম। ১০ দিন পর আবার সেই ১ম প্রশ্নটি মাধায় ঘুরতে থাকল যে, কেন মার্কেট মুভ করে?
মনে মনে ভাবলাম- হয়ত নিউজ এবং টেকনিকাল মিলেই মুভ করে।
যাই হোক আজ বুজতে পারছি তখন আমি অর্ধেক সত্যের মধ্যে ছিলাম।
আমার শিক্ষাঃ-
ফরেক্স ট্রেডিং হল একটি ভিন্ন রকম অনেক কঠিন আর্ট। এখানে কেউ কোন রকম ডাউট ছাড়া কেউ কখনও ক্লিয়ারলি বলতে পারবে না যে মার্কেট আজ আপ হবে। ফরেক্স মার্কেট অনেক রকম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ ও কিছু বড় বড় অংশর সমন্বয়ে গঠিত যার প্রতিফলন আমরা চার্ট এর মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি এবং তা সবসময়ই একটি কঠিন আর্ট করতেই থাকে।
আমি যা মনে করি তা হলঃ-
একটি সাকসেস ট্রেড প্লেস করার জন্য অবশ্যই আমাকে টেকনিকাল, অর্ডার ফলো, সাপ্লাই ডিমান্ড, মার্কেট সেন্টিমেন্ট ও কোরিলেশন জানতে হবে। এর অর্থ এই নয় যে আপনাকে ইকোনোমিক এর উপর বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করতে হবে, তবে অবশ্যই বেসিক প্রিন্সিপাল বা মাধ্যমিক ইস্কুল অবশ্যই পাশ করতে হবে।
এবার চলুন কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।
১) কেন ফরেক্স মার্কেট মুভ করে?
২) কিভাবে ফরেক্স মার্কেট বড় রকম মুভ করে?
৩) কখন ফরেক্স মাকের্টে বড় মুভগুলো করে?
************************************************
১) কেন ফরেক্স মার্কেট মুভ করে?
************************************************
This is not a trick question. ধরুন এক দিনে EUR/USD ১.৩৪০০ হতে ১.৩৫৫০ এ গেল-
উপরের প্রশ্নটি নিজের মনকে করুন। ওকে, আমি একটি সহজ উত্তর দিচ্ছি। সেল ভলিয়মের থেকে বাই এর ভলিয়ম বেশী থাকায় ১৫০ পিপস আপ হয়েছে। আরও সহজ উত্তর হল ইউএসডির থেকে ইউরো বেশী ডিমান্ড এ ছিল। মার্কেটের প্রতিটি পিপস মুভমেন্ট এর জন্য নিদিষ্ট সময়ে নিদির্ষ্ট পরিমান ভলিয়মের ট্রেড এর প্রয়োজন হয়। আর যখন তা অনেক সময় ধরে ট্রেড হয় তখন মার্কেট একটি টেক্সিক্যাপ এর মত বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। তবে প্রধম থেকে মার্কেটের প্রাইজ যা ছিল তা কিন্তু আর ফিরে আসে না। যখন মার্কেটে নিদির্ষ্ট সময়ে নিদিষ্ট ভলিয়মের কোন ট্রেড হয় না তখন মার্কেট চুপটি মেরে থাকে।
এখন আসল প্রশ্ন হল একটি নিদিষ্ট সময়ে কেন বেশীরভাগ ট্রেডার একই দিকে ট্রেড করে। উত্তর হল সাপ্লাই ও ডিমান্ড। ফরেক্স র্চাট কে বুঝার একটি সহজ উপায় হল কোন পেয়ারে কোন কারেন্সি বেশী ডিমান্ড এ আছে।
১মিঃ চিন্তা করেন।
কেন ইউরোইউএসডি আপ হচ্ছে? কারন হল মার্কেট প্রত্যাশা করছে যে ইউএসডির থেকে ইউরো এর মুল্য বাড়তে পারে।
এখন আরও বেশী গুড়ুত্বর্পুন প্রশ্ন হল কেন মার্কেট প্রত্যাশা করছে যে ইউএসডির থেকে ইউরো এর দাম বাড়বে?
এখন উপরের প্রশ্নের আসল উত্তর হল ফান্ডামেন্টাল নিউজ। হা বড় বড় অথর্নৈতিক নিউজ এর রেজাল্ট ও তার পলিসির জন্য যা একটি রাষ্ট্রে বিজনেস করার পরিবেশ তৈরী বা নষ্ট হয় ফলে বড় বড় বিভিন্ন দেশের ইনভেষ্টররা সেভাবে ঐ রাষ্ট্রে ইনভেষ্ট করে থাকে। আর তাদেরকে বিভিন্ন দেশ হতে সেই দেশে ইনভেষ্ট করার জন্য প্রচুর পরিমানে ঐ রাষ্ট্রের মুদ্রা কিনতে হয়। আর মুদ্রা কেনা বেচার সবচেয়ে বড় বাজার হল ফরেক্স মার্কেট। তাই তারা তা ফরেক্স মার্কেট থেকেই কিনতে হয়। আর এক সঙ্গে বিপুল পরিমান মুদ্রা কিনতে গিয়ে ফরেক্স মার্কেটে মুদ্রা সংকটে পরে। ঠিক ঐ সময়ই ফরেক্স এ প্রচুর পরিমান প্রাইজ আপডাউন হয়। আর ফরেক্স ট্রেডারদের সেই আপডাউনের মাধ্যমেই প্রফিট বের করে নিতে হয়।
আর যখন কোন ভালো বা খারপ প্রত্যাশা নিউজ থেকে আসে না, তখন মার্কেট মুভ করে না।
ফান্ডামেন্টাল নিউজ ই হল ফরেক্স মার্কেটকে বুঝার একমাত্র চাবি।
মার্কেট কখনও চিন্তা করে না যে আমি আগে কোথায় ছিলাম আর সেজন্য কোথায় যাব? তবে মার্কেট অবশ্যই এটা চিন্তা করে যে আমি এখন কোথায় আছি আর ভবিষ্যতে কোথায় যেতে পারি।
************Important Concepts*****************
*** Fundamental news moves the market.
*** Market constantly ajdusts to reach equilibrium.
*** Current Price is a reflection of market perception of what the future price is going to be.
২য় প্রশ্ন হলঃ- ফরেক্স মার্কেট কিভাবে মুভ করে?
প্রশ্নটি আপনাদের কাছে হয়ত অনেক সহজ একটি প্রশ্ন হতে পারে কিন্তু এর উত্তরটি মোটেও সহজ নয়।
প্রতিটি পেয়ারের একটি সতন্ত্র ও নিজেস্ব ব্যক্তিত্ত এবং অন্যদের সাথে একটি নিদির্ষ্ট অনুপাতে মুভমেন্ট করে। একজন সাকসেস ট্রেডার অবশ্যই নির্দিষ্ট কয়েকটি পেয়ারে ট্রেড করে থাকেন যেগুলো তাদের সাথে যায়। আমরা যখন ১/৪ ঘন্টার চার্ট্ দেখি তখন শুরু থেকে শেষ পর্য্ন্ত দেখতে পাই যে সেই পেয়ারটি কিভাবে এবং কত সময়ে কতদুর মুভ করেছে। কিন্তু আমরা যা দেখি তা অতীত এবং এর অর্থ্ এই নয় যে ভবিষ্যতেও ঐভাবেই মুভমেন্ট করবে।
চলুন আমরা সবাই ১ মাসের জন্য ডেমোতে একটা পরীক্ষা করে দেখি ইউরো/ইউএসডি পেয়ারে।
প্রতি ১ঘন্টা পরপর ১টি করে ট্রেড দেই ৩০ পিপস এসএল ও টিপি দিয়ে। একমাস পর্য্ন্ত তা করি। দেখা যাক কি পাওয়া যাবে।
হা, অবশ্যই আপনি ইউরোইউএসডির হলিগ্রেইল খুজে পাবেন।
যা শিখবেন তা হলোঃ-
• সচরাচর একটি বুলিশ দিন আর একটি বেয়ারিশ দিনকে ফলো করছে।
• যদি এক্সিট্রিম বুলিশ হয় তাহলে পরের দিন তা কন্টিনিউ বা এক্সষ্ট্রিম রিট্রেসমেন্ট করেছে।
• মুভমেন্ট বেশীরভাগ রিট্রেস বা কন্টিনিউ 7:30am and 11:30am NY Time. এ ঘটেছে।
• ইউরো/ইউএসডি তার বর্ত্ মান প্রাইজের মুভমেন্ট রেঞ্জ হল ১% এর মধ্যে।
• মাঝে মাঝে প্রাইজ পয়েন্ট ০০ ও ৫০ থেকে সাপের্ট্ রেসিষ্টেন্ট তৈরী করে কন্টিনিউ করেছে।
প্রতিটি পেয়ার কিন্তু তাদের নিজেস্ব ও স্বাধীন এবং অন্যের সাথে একটি নিদিষ্ট অনুপাতে মুভমেন্ট করে।তাই তাদের নিজেস্ব ও আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছ্ েযেমন জিপিবি/ইউিএসডি ৭০% পর্য্ন্ত রিট্রেস করতে পারে যেখানে ইউরো/ইউএসডি তার তুলনায় অনেক কম। একজন সাকসেস ট্রেডার অবশ্যই তাদের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট কাজে লাগিয়ে বেশি পরিমান প্রফিট বের করে নিতে পারে যা তাকে পরবর্তী টেড করার জন্য প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করে।
আমি শুনেছি যে সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রতিটি ট্রেডার তাদের নিজেস্ব মাত্র একটি পেয়ারেই ট্রেড করে থাকে। এখানে অবশ্যই একটি বিশেষ গোপন ব্যপার আছে যা তারা মেনে চলে।
আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, প্রতিদিন এর মুভমেন্ট রেঞ্জ, সাপোর্ট্ রেসিষ্টটেন্স, এবং বিভিন্ন কারেন্সির সাথে কো-রিলেশন।
এই বিষয়ে পরে সময় ও সুযোগ পেলে ডিটেল লিখব। তাবে সাপোর্ট্ রেসেষ্টটেন্স ৪ টি পেয়ার এ একসাথে হিসেব করলে বেশী ভাল হয়। আর কো-রিলেশন এর একটি ছোট উদাহরন দিচ্ছি।
ধরি-
ইউএসডি/ইয়েন= ১০০.৩৫ আর জিবিপি/ইয়েন= ১৯৯.৫৪ চলছে। এখন যদি ইয়েন এর প্রভাবে ইউএসডি/ইয়েন ৫০ পিপস মুভ করে তাহলে জিবিপি/ইয়েন প্রায় ৯৯.৯৫ পিপস মুভমেন্ট করতে পারে। কারন হল ১ম প্রাইজ দিয়ে ২য় প্রাইজ কে ভাগ করলে ১.৯৯ প্রায় আসতে পারে। কিন্তু এটা যে সবসময় নিখুতভাবে মেইনটেন করে চলবে তা গুরুত্বপূর্ন্ নয়। কারন এখানে ইউএসডি ও জিবিপি এর সাপ্লাই/ডিমান্ড এর বিষয়ও আছে। কিন্তু এটি আপনাকে মার্কেটে বুজতে সাহায্য করবে যে এখন মার্কেটে কে আসলে মুভমেন্ট করাচ্ছে। আর একটু কষ্ট করলেই এখান থেকেই আপনি জিবিপি/ইউএসডি এর প্রাইজ ও পেতে পারেন।
Correlation is defined as the degree to which economic variables are observed to move together.
If they move in the same direction, then there is positive correlation; if they move in opposite
directions, then there is negative correlation.
আর একটি উদাহরন হলঃ EUR/USD আর USD/CHF এর নেগেটিভ কোরিলেশন। যদি EUR/USD ১০০ পিপস আপ হয় তবে USD/CHF ৯৩ পিপস ডাউন হবে। আবার এটি নির্ভ্র করবে তাদের ঐ সময়ের রানিং প্রাইজ এর উপর।
***************************************************************
************************Important Concepts************************
* Every currency pairs moves differently.
* Learn about daily ranges, support & resistance areas, and correlation to other currency pairs is key to understanding HOW they move.
* Use correlation as confirmation to your existing trades or the planning of your future entries.
* Limit your trading only to a few currency pairs, generally don’t trade more than 4 currency pairs.
* It is better to be focused on a few and know that you can catch most of the movements than to be focused on all and worry about missing out.
৩) কখন ফরেক্স মাকের্টে বড় মুভগুলো করে?
*********************************************
একদিন আমার এক ফ্রেন্ড আমাকে প্রশ্ন করলো মাঝে মাঝে দেখি মার্কেটে প্রাইস অনেক বাড়ে-কমে। আবার অনেক সময় দেখি কোনো মুভমেন্টই হয়না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কম্পিউটারের সামনে এত সময় বসে থাকতে বোরিং লাগে। যদি জানতাম কখন কখন বড় মুভমেন্ট হবে, তাহলে শুধু তখনই ট্রেড করতাম, আর বাকি সময় অন্য কাজ করা যেত কিংবা মুভি দেখা যেত।
আমি বললাম ফরেক্স মার্কেট সপ্তাহে ৫ দিন ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। মার্কেট সবসময় ওপেন থাকে তার মানে এই নয় যে আমাদের সবসময় ট্রেড করা উচিত। কারন মার্কেট সবসময় সক্রিয় থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় মার্কেটে কোন নড়াচড়া নেই অর্থাৎ ভোলাটিলিটি নেই। আমরা ফরেক্সে প্রফিট করতে পারি যখন প্রাইস বাড়ে কিংবা কমে। কিন্তু যদি মার্কেটে তেমন একটা মুভমেন্টই না হয়, তাহলে প্রফিট হবে কিভাবে?
সে বলল, তাহলে আমরা ট্রেড করবো টা কখন? এরকম হবার কারন টা কি?
আমি তাকে বললাম যে, ফরেক্স মার্কেটে ২৪ ঘণ্টাকে আমরা প্রধানত ৪টা ভাগে ভাগ করতে পারি। এগুলো হল সিডনী সেশন, টকিয়ো সেশন, লন্ডন সেশন এবং নিউইয়র্ক সেশন। আমার কাছে নিউইয়র্ক সেশনটাই সবচেয়ে প্রিয়।
আমার ফ্রেন্ড এর উত্তরে আমাকে বলল, এগুলো তো শহরের নাম। আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম এই চারটা সেশন যখন শুরু হয়, তখন মার্কেটে অনেক ভোলাটিলিটি শুরু হয়। এর কারন হল একটি সেশন ওপেন হলেই সেই অঞ্চলে অনেক ব্যবসা-বানিজ্য, লেন-দেন ইত্যাদি শুরু হয়। অর্থনীতি সম্পর্কে বড় বড় নিউজ-সিদ্ধান্ত ঐ সময়েই নেয়া হয় অধিকাংশ সময়ে। তাই নতুন সেশন শুরু হলেই মার্কেটে বড়-সড় মুভমেন্ট/নড়াচড়া শুরু হয়ে যায়। নিচের চার্টটি ওকে দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশন কখন শুরু এবং শেষ হয়।
বন্ধুটি এবার বলল, গ্রীষ্মকাল (summer) আর শীতকালে (winter) ভিন্ন সময়ে সেশন ওপেন হয় কেন? আমি তাকে বললাম DST (Day-Light Saving Time) এর কথা মনে আছে যেটা বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে চালু হয়েছিল? বন্ধুটি বলল, হ্যা। তখন তো আমাদের সময় আমরা ১ ঘণ্টা এগিয়ে দিয়েছিলাম। এবার আমি বললাম, পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোও তাদের কাজের সময় বৃদ্ধির জন্য গ্রীষ্মকাল এবং শীতকালে ১ ঘণ্টা সময় পরিবর্তন করে। আর সে কারনেই আমাদের এখানেও বাংলাদেশ সময় অনুসারে সেশনগুলো ওপেন-ক্লোজের সময় পরিবর্তন হয়। এখানে BST দিয়ে Bangladesh Standard Time বোঝানো হয়েছে।
এবার বন্ধুটি আমাকে বলল, যেকোনো সেশন ওপেন হলে যেহুতু মার্কেটে ভোলাটিলিটি বেড়ে যায়, ২টা সেশন একসাথে ওপেন থাকলে নিশ্চয়ই ভোলাটিলিটি আরও বেশি থাকে, মানে মুভমেন্ট আরও বেশি হয়?
এবার আমি বুঝলাম যে আমার বন্ধু আস্তে আস্তে ব্যাপারটা বুঝতে পারছে। আমি তাকে বললাম হ্যা, ব্যাপারটা ঠিক এইরকম। গ্রীষ্মকালে দুপুর ১:০০ থেকে দুপুর ৩:০০ পর্যন্ত টকিয়ো ও লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ করে এবং সন্ধ্যা ৬:০০ থেকে রাত ১০:০০ পর্যন্ত লন্ডন ও নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে। তাই এই সময়ে মুভমেন্টও থাকে বেশি। ট্রেড করার জন্য মোটামুটি আদর্শ সময়।
এবার আমি বন্ধুকে ৩ নং এই চার্টটি দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশনে কোন পেয়ারের এভারেজ মুভমেন্ট কত পিপস। দেখা যায় লন্ডন সেশনেই সবচেয়ে বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। আর যেহুতু নিউইয়র্ক সেশন লন্ডন সেশনের সাথে ৪ ঘণ্টা ওভারল্যাপ করে, সেহুতু লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই ২টি সেশন ট্রেড করার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
টকিয়ো সেশন দিয়েই তাহলে শুরু করা যাক।
টকিয়ো সেশন
বাংলাদেশ সময় ভোর ৬:০০ টায় টকিয়ো সেশন শুরু হয় এবং দুপুর ৩:০০ টায় টকিয়ো সেশন শেষ হয়। টকিয়ো সেশন এশিয়ান সেশন নামেও পরিচিত, কারন টকিয়ো হল এশিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী। আর জাপান হল পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম ফরেক্স ট্রেডিং সেন্টার। জাপানিজ ইয়েন হল পৃথিবীর ৩য় সর্বাধিক ট্রেডকৃত কারেন্সি। সব ফরেক্স লেনদেনের ১৬.৫০% লেনদেন হয় ইয়েনের। এবং সকল ফরেক্স লেনদেনের ২১% হয় এই টকিয়ো সেশনে।
টকিয়ো সেশনের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আমি ওকে বলেছিলাম। সেগুলো হলঃ
• এই সেশনের যে শুধু জাপানের অবদান থাকে তাই নয়, হংকং, সিঙ্গাপুর, সিডনী ইত্যাদি অঞ্ছলেও অনেক অর্থনৈতিক লেনদেন হয় যা এই সেশনে প্রভাব ফেলে।
• জাপান মূলত রপ্তানি নির্ভর দেশ। চায়নারও এখানে ভালো অবদান রয়েছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংক এবং এক্সপোর্টাররা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
• মাঝে মাঝে মার্কেটে ভোলাটিলিটি এতও কমে যায় যে ট্রেডারদেরকে ট্রেড করার জন্য মাছ ধরার বরশি নিয়ে অপেক্ষা করার মত বসে থাকতে হয়।
• মূলত এশিয়ান পেয়ারগুলোতে অন্য পেয়ারগুলোর তুলনায় বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। যেমন eur/usd, gbp/usd এর তুলনায় aud/usd, nzd/usd, usd/jyp, eur/jyp, aud/jyp তে মুভমেন্ট বেশি হয়।
• এই কম ভোলাটিলিটির সময় বেশিরভাগ পেয়ার একটি রেঞ্জের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, যা কিনা দিনের পরবর্তী সময়ে ব্রেকআউট ট্রেডের সুযোগ সৃষ্টি করে।
• এই সেশনের শুরুতেই সাধারনত মুভমেন্ট বেশি হয়, কারন তখনই অর্থনৈতিক নিউজগুলো বেশি পাবলিশ হয়।
• টকিয়ো সেশনের মুভমেন্ট দেখেই ট্রেডাররা সাধারনত পরবর্তী সেশনে ট্রেড করার স্ট্রাটেজি ঠিক করে।
টকিয়ো সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার বন্ধুটি বলল, অনেক কিছু জানা গেল। কিন্তু টকিয়ো সেশনে কোন কোন পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভালো হবে? এই সেশনে তো অন্যান্য পেয়ারগুলো থেকে এশিয়ান পেয়ারগুলোতে মুভমেন্ট বেশি হয়। তাহলে আমাদের সেইসব পেয়ার ট্রেড করা উচিত?
টকিয়ো সেশনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, জাপানের গুরুত্বপূর্ণ নিউজ পাবলিশ হয়। এরফলে নিউজ ট্রেড করার একটু ভালো সুযোগ পাওয়া যায়। JPY পেয়ারগুলোতে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। চায়না কিন্তু আরেকটি অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার। তাই যখনই চায়না থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিউজ প্রকাশিত হয়, তা ফরেক্স মার্কেটে ভালো ভোলাটিলিটি সৃষ্টি করে। টকিয়ো সেশনে JPY এবং AUD পেয়ারে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। তাই এই পেয়ারগুলো ট্রেড করার জন্য উত্তম।
লন্ডন সেশন
যখন এশিয়ান মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়, তার কিছুক্ষন পরই লন্ডন সেশন শুরু হয়। লন্ডন সেশন ইউরোপিয়ান সেশন নামেও পরিচিত। ইউরোপে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মার্কেট রয়েছে, যদিও ট্রেডারদের চোখ বেশিরভাগ সময় থাকে লন্ডনের দিকে। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১:০০ (শীতকালে দুপুর ২:০০) – টায় লন্ডন সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ১০:০০ (শীতকালে রাত ১১:০০) – টায় লন্ডন সেশন শেষ হয়।
ঐতিহাসিকভাবেই লন্ডন ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতি মিনিটেই হাজার হাজার ব্যবসায়ী এখানে লেনদেন করে। সর্বমোট লেনদেনের ৩০% হয়য় শুধুমাত্র এই লন্ডন সেশনেই।
টকিয়ো সেশনের মত লন্ডন সেশনেরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হলঃ
• লন্ডন সেশন ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেশনের সাথে (টকিয়ো এবং নিউইয়র্ক) ওভারল্যাপ করে। অসংখ্য ফরেক্স লেনদেন এই সেশনে ঘটে। তাই দেখা যায় এই সময়ে মার্কেটে লিকুইডিটিও থাকে বেশি এবং পেয়ারগুলোতে স্প্রেডও থাকে তুলনামুলক ভাবে কম।
• অসংখ্য লেনদেন এবং ট্রেড হবার কারনে লন্ডন সেশন হল সবচেয়ে বেশি ভোলাটাইল সেশন
• দেখা যায় অধিকাংশ ট্রেন্ড লন্ডন সেশনে শুরু হয়য় এবং নিউইয়র্ক সেশনের শুরু পর্যন্ত চলতে থাকে।
• এই সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ভোলাটিলিটি কিছুটা কমে যায়, কারন ট্রেডাররা নিউইয়র্ক সেশন শুরুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
• অনেকসময় দেখা যায় লন্ডন সেশনের শেষের দিকে ট্রেন্ড রিভার্স হয়ে যায়। কারন ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষের আগে তাদের ট্রেড প্রফিতে ক্লোজ করে দিতে চায়।
লন্ডন সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার বন্ধুটি আমাকে প্রশ্ন করলো, নিশ্চয়ই লন্ডন সেশনে ইউরো আর পাউন্ডের পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভাল? আমি তাকে উত্তর দিলাম যেহুতু লন্ডন সেশনে অনেক বেশি ট্রেড হয়য়, তাই দেখা যায় এই সেশনে অনেক বেশি লিকুইডিটি থাকার কারনে প্রায় সব পেয়ারেই ট্রেড করা যায়। অবশ্যই মেজর পেয়ারগুলো ট্রেড করা জন্য ভালো যেমন – EUR/USD, GBP/USD, USD/JPY, USD/CHF, কারনে সেগুলোতে স্প্রেড কম থাকে। এবং এই পেয়ারগুলো দেখা ইউরোপিয়ান সেশনে যে নিউজগুলো আসে সেগুলো দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। এছাড়া ইয়েন ক্রস পেয়ারগুলোও ট্রেড করা যায় বিশেষ করে EUR/JPY এবং GBP/JPY, কারন এই পেয়ারগুলো তখন কিছুটা ভোলাটাইল থাকে।
নিউইয়র্ক সেশন
লন্ডন সেশন চলতে চলতে যখন মার্কেটের ভোলাটিলিটি কিছুটা স্থির হয়ে আসে, তখন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:০০ (শীতকালে সন্ধ্যা ৭:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ৩:০০ (শীতকালে রাত ৪:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শেষ হয়। এশিয়া এবং ইউরোপের মত, আমেরিকাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরেক্স মার্কেট। সব ট্রেডারদের দৃষ্টি থাকে নিউইয়র্ক সেশনের দিকে। নিউইয়র্ক সেশন আমেরিকান সেশন নামেও পরিচিত।
নিউইয়র্ক সেশনের বৈশিষ্ট্যগুলো হলঃ
• যেহুতু এই সেশনটি লন্ডন সেশনের সাথে ওভারল্যাপ করে, তাই এই সেশনের শুরুতে মার্কেটে লিকুইডিটি বেশি থাকে।
• অধিকাংশ অর্থনৈতিক রিপোর্ট এবং নিউজ এই সময়ে প্রকাশ হয়। প্রায় ৮৫% ট্রেডগুলোই ডলার এর সাথে কোনো না কোন ভাবে সম্পর্কিত। তাই যখন কোন আমেরিকান ইকনোমিক ডাটা রিলিজ হয়, তা মার্কেটকে মুভ করাতে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।
• লন্ডন সেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর, নিউইয়র্ক সেশনের শেষের দিকে মার্কেটে ভলাটিলিটি এবং লিকুইডিটি অনেক কমে যায়। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত মুভমেন্ট প্রায় থাকেনা বললেই চলে।
• শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতের দিকে মার্কেট প্রায় শান্ত হয়ে যায়। কারন পরেরদিন মার্কেট অফ থাকার কারনে জন্য মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক কম থাকে।
• শুক্রবারে নিউইয়র্ক সেশনের মাঝামাঝি সময়ে অনেক সময় প্রাইস রিভারস করতে দেখা যায়। কারন অনেক ট্রেডাররা মার্কেট হলিডের সময় কোন নিউজের প্রভাব উপেক্ষা করার জন্য সপ্তাহ শেষ হবার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
নিউইয়র্ক সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
বন্ধুটি আমাকে বলল, যেহুতু এই সেশনে মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক বেশি থাকে, তাই নিশ্চয়ই প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়? আমি বুঝতে পারলাম বন্ধুটি ফরেক্স মার্কেটের ট্রেডিং সেশনগুলো সম্পর্কে ভালো ধারনা অর্জন করে ফেলেছে। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। এই সেশনে প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়, কারন ভালো মুভমেন্ট থাকে। আর এই সেশনে ডলারের বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ডাটা রিলিজ হওয়ার কারনে দেখা যায় সবাই নিউজগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকে, কারন সবাই ডলার ভালবাসে। আর এই নিউজগুলো খারাপ আসুক কিংবা প্রত্যাশিত আসুক, ডলারের লাফালাফির কারনে তা মার্কেটকে নাটকীয়ভাবে প্রচণ্ড নাড়া দিতে পারে।
সেশনের ওপর সেশন – সেশন ওভারল্যাপঃ
বন্ধুটি আমাকে প্রশ্ন করলো দিনের মধ্যে ট্রেড করার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় কোনটি? এবার আমি বন্ধুটিকে জিজ্ঞেস করলাম, বলতো টেলিভিশনে সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামগুলো কখন দেখায়? বন্ধুটি উত্তর দিল- “ফ্যামিলি টাইম”. আমি বললাম ঠিক তাই। কিন্তু কারণটা কি? বন্ধুটি আমাকে উত্তর দিল কারন সেই সময়ে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে টেলিভিশন দেখে, তাই ভালো প্রোগ্রামগুলো প্রচার করা হয়। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। ফরেক্স মার্কেটের ক্ষেত্রেও একই রকম। মার্কেটে যখন ২টি সেশন ওভারল্যাপ করে, তখন মার্কেটে মুভমেন্টও বেশি হয়, তাই ট্রেড করার সুযোগও থাকে বেশি।
ফরেক্স মার্কেটে ২টি প্রধান সেশন ওভার ল্যাপ হলঃ
• টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ
• লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ
টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপঃ
টকিয়ো সেশনে মুভমেন্ট অন্য সেশনগুলোর তুলনায় খুব একটা বেশি হয়না। আর টকিয়ো-লন্ডন সেশন যখন ওভারল্যাপ করে, তখন টকিয়ো সময় অনেকটা বিকেল তাই মুভমেন্ট কমই থাকে। ট্রেড করার জন্য এই সময়টা কিছুটা বোরিং লাগতে পারে। অনেক নতুন ট্রেন্ড তৈরি হয় এই সময়ে, কিন্তু অনেক ট্রেডাররাই ট্রেন্ড কনফারমেশনের জন্য লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশনের জন্য অপেক্ষা করে।
লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপঃ
এই সেশন ওভারল্যাপ হল ট্রেড করার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময় ট্রেডাররা সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে মার্কেটের দিকে মনোনিবেশ করে। এই সেশন ওভারল্যাপ হল দিনের সবচেয়ে ব্যাস্ত সময়, কারন ২টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ট্রেডিং সেন্টার লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই সময় ওপেন থাকে।
এই সময় মার্কেটে অনেক বড় বড় মুভমেন্ট দেখা যায় বিশেষ করে যখন আমেরিকা এবং কানাডা থেকে নিউজ-রিপোর্টগুলো প্রকাশিত হয়। ইউরোপ থেকে দেরিতে প্রকাশ হওয়া নিউজগুলোও ভালো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। যদি লন্ডন সেশনে কোন ট্রেন্ড তৈরি হয়, তবে বেশিরভাগ সময় নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপের সময় তা কন্টিনিউ করতে দেখি। কারন আমেরিকান ট্রেডাররা সেদিন আগে কি হয়েছিল তা জেনে ট্রেড করতে ঝাপিয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ সময় পূর্বের ট্রেন্ড অনুসরন করে। এই সেশন ওভারল্যাপ শেষ হবার পর পরই দেখা যায় মার্কেটে মুভমেন্ট অনেক কমে যায়, কারন অনেক ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষে তাদের ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
ট্রেড করার জন্য সপ্তাহের সেরা দিনগুলোঃ
বন্ধুটি আমাকে বলল, সবশেষে যা বোঝা গেল, তা হল লন্ডন সেশনই হল ফরেক্স মার্কেটের সবচেয়ে ব্যাস্ততম সেশন। আর তারসাথে যদি নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু ট্রেড করার জন্য কি বিশেষ কোন ভালো দিন রয়েছে? আমি তাকে বললাম হ্যাঁ। কিছু বিশেষ দিন রয়েছে যে দিনগুলোতে মার্কেট অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশীই মুভ করে।
সপ্তাহের কোন দিনগুলোতে গড়ে কোন পিপস মুভমেন্ট হয় সেটা আমি ত্রিভুজকে এই চার্টের মাধ্যমে দেখাইঃ
ওপরের চার্ট থেকে দেখা যায় যে, সপ্তাহের মাঝের দিনগুলোতেই মুভমেন্ট বেশী হয়। সপ্তাহের এই দিনগুলোতেই সবচেয়ে বেশী পিপস মুভমেন্ট দেখা যায়। অনেক সময় দেখা যায় সোমবার অনেক জায়গায় ব্যাংক হলিডে থাকে, নিউজ কম রিলিজ হয় কিংবা ট্রেডাররা নতুন সপ্তাহে কোনদিকে ট্রেন্ড মোড় নিবে তা ঠিক করতে না পেরে ট্রেড কম করে। ওপরদিকে শুক্রবার অনেকেই বিকেলের পর ট্রেড করে না পরেরদিন মার্কেট হলিডে থাকায়। সেই অর্থে শুক্রবার মার্কেট বলা যায় অর্ধেক সময় অ্যাকটিভ থাকে।
এখানে অনেক তথ্য বিভিন্ন স্থান থেকে নেওয়া হয়েছে। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আপনাদের আশানুরুপ সারা পেলে এর ৪র্র্র্র্থ পর্র্ টি দেওয়ার চেষ্টা করব।
*********************************************
একদিন আমার এক ফ্রেন্ড আমাকে প্রশ্ন করলো মাঝে মাঝে দেখি মার্কেটে প্রাইস অনেক বাড়ে-কমে। আবার অনেক সময় দেখি কোনো মুভমেন্টই হয়না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কম্পিউটারের সামনে এত সময় বসে থাকতে বোরিং লাগে। যদি জানতাম কখন কখন বড় মুভমেন্ট হবে, তাহলে শুধু তখনই ট্রেড করতাম, আর বাকি সময় অন্য কাজ করা যেত কিংবা মুভি দেখা যেত।
আমি বললাম ফরেক্স মার্কেট সপ্তাহে ৫ দিন ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। মার্কেট সবসময় ওপেন থাকে তার মানে এই নয় যে আমাদের সবসময় ট্রেড করা উচিত। কারন মার্কেট সবসময় সক্রিয় থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় মার্কেটে কোন নড়াচড়া নেই অর্থাৎ ভোলাটিলিটি নেই। আমরা ফরেক্সে প্রফিট করতে পারি যখন প্রাইস বাড়ে কিংবা কমে। কিন্তু যদি মার্কেটে তেমন একটা মুভমেন্টই না হয়, তাহলে প্রফিট হবে কিভাবে?
সে বলল, তাহলে আমরা ট্রেড করবো টা কখন? এরকম হবার কারন টা কি?
আমি তাকে বললাম যে, ফরেক্স মার্কেটে ২৪ ঘণ্টাকে আমরা প্রধানত ৪টা ভাগে ভাগ করতে পারি। এগুলো হল সিডনী সেশন, টকিয়ো সেশন, লন্ডন সেশন এবং নিউইয়র্ক সেশন। আমার কাছে নিউইয়র্ক সেশনটাই সবচেয়ে প্রিয়।
আমার ফ্রেন্ড এর উত্তরে আমাকে বলল, এগুলো তো শহরের নাম। আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম এই চারটা সেশন যখন শুরু হয়, তখন মার্কেটে অনেক ভোলাটিলিটি শুরু হয়। এর কারন হল একটি সেশন ওপেন হলেই সেই অঞ্চলে অনেক ব্যবসা-বানিজ্য, লেন-দেন ইত্যাদি শুরু হয়। অর্থনীতি সম্পর্কে বড় বড় নিউজ-সিদ্ধান্ত ঐ সময়েই নেয়া হয় অধিকাংশ সময়ে। তাই নতুন সেশন শুরু হলেই মার্কেটে বড়-সড় মুভমেন্ট/নড়াচড়া শুরু হয়ে যায়। নিচের চার্টটি ওকে দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশন কখন শুরু এবং শেষ হয়।
বন্ধুটি এবার বলল, গ্রীষ্মকাল (summer) আর শীতকালে (winter) ভিন্ন সময়ে সেশন ওপেন হয় কেন? আমি তাকে বললাম DST (Day-Light Saving Time) এর কথা মনে আছে যেটা বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে চালু হয়েছিল? বন্ধুটি বলল, হ্যা। তখন তো আমাদের সময় আমরা ১ ঘণ্টা এগিয়ে দিয়েছিলাম। এবার আমি বললাম, পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোও তাদের কাজের সময় বৃদ্ধির জন্য গ্রীষ্মকাল এবং শীতকালে ১ ঘণ্টা সময় পরিবর্তন করে। আর সে কারনেই আমাদের এখানেও বাংলাদেশ সময় অনুসারে সেশনগুলো ওপেন-ক্লোজের সময় পরিবর্তন হয়। এখানে BST দিয়ে Bangladesh Standard Time বোঝানো হয়েছে।
এবার বন্ধুটি আমাকে বলল, যেকোনো সেশন ওপেন হলে যেহুতু মার্কেটে ভোলাটিলিটি বেড়ে যায়, ২টা সেশন একসাথে ওপেন থাকলে নিশ্চয়ই ভোলাটিলিটি আরও বেশি থাকে, মানে মুভমেন্ট আরও বেশি হয়?
এবার আমি বুঝলাম যে আমার বন্ধু আস্তে আস্তে ব্যাপারটা বুঝতে পারছে। আমি তাকে বললাম হ্যা, ব্যাপারটা ঠিক এইরকম। গ্রীষ্মকালে দুপুর ১:০০ থেকে দুপুর ৩:০০ পর্যন্ত টকিয়ো ও লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ করে এবং সন্ধ্যা ৬:০০ থেকে রাত ১০:০০ পর্যন্ত লন্ডন ও নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে। তাই এই সময়ে মুভমেন্টও থাকে বেশি। ট্রেড করার জন্য মোটামুটি আদর্শ সময়।
এবার আমি বন্ধুকে ৩ নং এই চার্টটি দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশনে কোন পেয়ারের এভারেজ মুভমেন্ট কত পিপস। দেখা যায় লন্ডন সেশনেই সবচেয়ে বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। আর যেহুতু নিউইয়র্ক সেশন লন্ডন সেশনের সাথে ৪ ঘণ্টা ওভারল্যাপ করে, সেহুতু লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই ২টি সেশন ট্রেড করার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
টকিয়ো সেশন দিয়েই তাহলে শুরু করা যাক।
টকিয়ো সেশন
বাংলাদেশ সময় ভোর ৬:০০ টায় টকিয়ো সেশন শুরু হয় এবং দুপুর ৩:০০ টায় টকিয়ো সেশন শেষ হয়। টকিয়ো সেশন এশিয়ান সেশন নামেও পরিচিত, কারন টকিয়ো হল এশিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী। আর জাপান হল পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম ফরেক্স ট্রেডিং সেন্টার। জাপানিজ ইয়েন হল পৃথিবীর ৩য় সর্বাধিক ট্রেডকৃত কারেন্সি। সব ফরেক্স লেনদেনের ১৬.৫০% লেনদেন হয় ইয়েনের। এবং সকল ফরেক্স লেনদেনের ২১% হয় এই টকিয়ো সেশনে।
টকিয়ো সেশনের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আমি ওকে বলেছিলাম। সেগুলো হলঃ
• এই সেশনের যে শুধু জাপানের অবদান থাকে তাই নয়, হংকং, সিঙ্গাপুর, সিডনী ইত্যাদি অঞ্ছলেও অনেক অর্থনৈতিক লেনদেন হয় যা এই সেশনে প্রভাব ফেলে।
• জাপান মূলত রপ্তানি নির্ভর দেশ। চায়নারও এখানে ভালো অবদান রয়েছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংক এবং এক্সপোর্টাররা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
• মাঝে মাঝে মার্কেটে ভোলাটিলিটি এতও কমে যায় যে ট্রেডারদেরকে ট্রেড করার জন্য মাছ ধরার বরশি নিয়ে অপেক্ষা করার মত বসে থাকতে হয়।
• মূলত এশিয়ান পেয়ারগুলোতে অন্য পেয়ারগুলোর তুলনায় বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। যেমন eur/usd, gbp/usd এর তুলনায় aud/usd, nzd/usd, usd/jyp, eur/jyp, aud/jyp তে মুভমেন্ট বেশি হয়।
• এই কম ভোলাটিলিটির সময় বেশিরভাগ পেয়ার একটি রেঞ্জের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, যা কিনা দিনের পরবর্তী সময়ে ব্রেকআউট ট্রেডের সুযোগ সৃষ্টি করে।
• এই সেশনের শুরুতেই সাধারনত মুভমেন্ট বেশি হয়, কারন তখনই অর্থনৈতিক নিউজগুলো বেশি পাবলিশ হয়।
• টকিয়ো সেশনের মুভমেন্ট দেখেই ট্রেডাররা সাধারনত পরবর্তী সেশনে ট্রেড করার স্ট্রাটেজি ঠিক করে।
টকিয়ো সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার বন্ধুটি বলল, অনেক কিছু জানা গেল। কিন্তু টকিয়ো সেশনে কোন কোন পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভালো হবে? এই সেশনে তো অন্যান্য পেয়ারগুলো থেকে এশিয়ান পেয়ারগুলোতে মুভমেন্ট বেশি হয়। তাহলে আমাদের সেইসব পেয়ার ট্রেড করা উচিত?
টকিয়ো সেশনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, জাপানের গুরুত্বপূর্ণ নিউজ পাবলিশ হয়। এরফলে নিউজ ট্রেড করার একটু ভালো সুযোগ পাওয়া যায়। JPY পেয়ারগুলোতে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। চায়না কিন্তু আরেকটি অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার। তাই যখনই চায়না থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিউজ প্রকাশিত হয়, তা ফরেক্স মার্কেটে ভালো ভোলাটিলিটি সৃষ্টি করে। টকিয়ো সেশনে JPY এবং AUD পেয়ারে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। তাই এই পেয়ারগুলো ট্রেড করার জন্য উত্তম।
লন্ডন সেশন
যখন এশিয়ান মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়, তার কিছুক্ষন পরই লন্ডন সেশন শুরু হয়। লন্ডন সেশন ইউরোপিয়ান সেশন নামেও পরিচিত। ইউরোপে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মার্কেট রয়েছে, যদিও ট্রেডারদের চোখ বেশিরভাগ সময় থাকে লন্ডনের দিকে। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১:০০ (শীতকালে দুপুর ২:০০) – টায় লন্ডন সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ১০:০০ (শীতকালে রাত ১১:০০) – টায় লন্ডন সেশন শেষ হয়।
ঐতিহাসিকভাবেই লন্ডন ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতি মিনিটেই হাজার হাজার ব্যবসায়ী এখানে লেনদেন করে। সর্বমোট লেনদেনের ৩০% হয়য় শুধুমাত্র এই লন্ডন সেশনেই।
টকিয়ো সেশনের মত লন্ডন সেশনেরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হলঃ
• লন্ডন সেশন ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেশনের সাথে (টকিয়ো এবং নিউইয়র্ক) ওভারল্যাপ করে। অসংখ্য ফরেক্স লেনদেন এই সেশনে ঘটে। তাই দেখা যায় এই সময়ে মার্কেটে লিকুইডিটিও থাকে বেশি এবং পেয়ারগুলোতে স্প্রেডও থাকে তুলনামুলক ভাবে কম।
• অসংখ্য লেনদেন এবং ট্রেড হবার কারনে লন্ডন সেশন হল সবচেয়ে বেশি ভোলাটাইল সেশন
• দেখা যায় অধিকাংশ ট্রেন্ড লন্ডন সেশনে শুরু হয়য় এবং নিউইয়র্ক সেশনের শুরু পর্যন্ত চলতে থাকে।
• এই সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ভোলাটিলিটি কিছুটা কমে যায়, কারন ট্রেডাররা নিউইয়র্ক সেশন শুরুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
• অনেকসময় দেখা যায় লন্ডন সেশনের শেষের দিকে ট্রেন্ড রিভার্স হয়ে যায়। কারন ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষের আগে তাদের ট্রেড প্রফিতে ক্লোজ করে দিতে চায়।
লন্ডন সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার বন্ধুটি আমাকে প্রশ্ন করলো, নিশ্চয়ই লন্ডন সেশনে ইউরো আর পাউন্ডের পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভাল? আমি তাকে উত্তর দিলাম যেহুতু লন্ডন সেশনে অনেক বেশি ট্রেড হয়য়, তাই দেখা যায় এই সেশনে অনেক বেশি লিকুইডিটি থাকার কারনে প্রায় সব পেয়ারেই ট্রেড করা যায়। অবশ্যই মেজর পেয়ারগুলো ট্রেড করা জন্য ভালো যেমন – EUR/USD, GBP/USD, USD/JPY, USD/CHF, কারনে সেগুলোতে স্প্রেড কম থাকে। এবং এই পেয়ারগুলো দেখা ইউরোপিয়ান সেশনে যে নিউজগুলো আসে সেগুলো দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। এছাড়া ইয়েন ক্রস পেয়ারগুলোও ট্রেড করা যায় বিশেষ করে EUR/JPY এবং GBP/JPY, কারন এই পেয়ারগুলো তখন কিছুটা ভোলাটাইল থাকে।
নিউইয়র্ক সেশন
লন্ডন সেশন চলতে চলতে যখন মার্কেটের ভোলাটিলিটি কিছুটা স্থির হয়ে আসে, তখন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:০০ (শীতকালে সন্ধ্যা ৭:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ৩:০০ (শীতকালে রাত ৪:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শেষ হয়। এশিয়া এবং ইউরোপের মত, আমেরিকাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরেক্স মার্কেট। সব ট্রেডারদের দৃষ্টি থাকে নিউইয়র্ক সেশনের দিকে। নিউইয়র্ক সেশন আমেরিকান সেশন নামেও পরিচিত।
নিউইয়র্ক সেশনের বৈশিষ্ট্যগুলো হলঃ
• যেহুতু এই সেশনটি লন্ডন সেশনের সাথে ওভারল্যাপ করে, তাই এই সেশনের শুরুতে মার্কেটে লিকুইডিটি বেশি থাকে।
• অধিকাংশ অর্থনৈতিক রিপোর্ট এবং নিউজ এই সময়ে প্রকাশ হয়। প্রায় ৮৫% ট্রেডগুলোই ডলার এর সাথে কোনো না কোন ভাবে সম্পর্কিত। তাই যখন কোন আমেরিকান ইকনোমিক ডাটা রিলিজ হয়, তা মার্কেটকে মুভ করাতে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।
• লন্ডন সেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর, নিউইয়র্ক সেশনের শেষের দিকে মার্কেটে ভলাটিলিটি এবং লিকুইডিটি অনেক কমে যায়। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত মুভমেন্ট প্রায় থাকেনা বললেই চলে।
• শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতের দিকে মার্কেট প্রায় শান্ত হয়ে যায়। কারন পরেরদিন মার্কেট অফ থাকার কারনে জন্য মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক কম থাকে।
• শুক্রবারে নিউইয়র্ক সেশনের মাঝামাঝি সময়ে অনেক সময় প্রাইস রিভারস করতে দেখা যায়। কারন অনেক ট্রেডাররা মার্কেট হলিডের সময় কোন নিউজের প্রভাব উপেক্ষা করার জন্য সপ্তাহ শেষ হবার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
নিউইয়র্ক সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
বন্ধুটি আমাকে বলল, যেহুতু এই সেশনে মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক বেশি থাকে, তাই নিশ্চয়ই প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়? আমি বুঝতে পারলাম বন্ধুটি ফরেক্স মার্কেটের ট্রেডিং সেশনগুলো সম্পর্কে ভালো ধারনা অর্জন করে ফেলেছে। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। এই সেশনে প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়, কারন ভালো মুভমেন্ট থাকে। আর এই সেশনে ডলারের বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ডাটা রিলিজ হওয়ার কারনে দেখা যায় সবাই নিউজগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকে, কারন সবাই ডলার ভালবাসে। আর এই নিউজগুলো খারাপ আসুক কিংবা প্রত্যাশিত আসুক, ডলারের লাফালাফির কারনে তা মার্কেটকে নাটকীয়ভাবে প্রচণ্ড নাড়া দিতে পারে।
সেশনের ওপর সেশন – সেশন ওভারল্যাপঃ
বন্ধুটি আমাকে প্রশ্ন করলো দিনের মধ্যে ট্রেড করার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় কোনটি? এবার আমি বন্ধুটিকে জিজ্ঞেস করলাম, বলতো টেলিভিশনে সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামগুলো কখন দেখায়? বন্ধুটি উত্তর দিল- “ফ্যামিলি টাইম”. আমি বললাম ঠিক তাই। কিন্তু কারণটা কি? বন্ধুটি আমাকে উত্তর দিল কারন সেই সময়ে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে টেলিভিশন দেখে, তাই ভালো প্রোগ্রামগুলো প্রচার করা হয়। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। ফরেক্স মার্কেটের ক্ষেত্রেও একই রকম। মার্কেটে যখন ২টি সেশন ওভারল্যাপ করে, তখন মার্কেটে মুভমেন্টও বেশি হয়, তাই ট্রেড করার সুযোগও থাকে বেশি।
ফরেক্স মার্কেটে ২টি প্রধান সেশন ওভার ল্যাপ হলঃ
• টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ
• লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ
টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপঃ
টকিয়ো সেশনে মুভমেন্ট অন্য সেশনগুলোর তুলনায় খুব একটা বেশি হয়না। আর টকিয়ো-লন্ডন সেশন যখন ওভারল্যাপ করে, তখন টকিয়ো সময় অনেকটা বিকেল তাই মুভমেন্ট কমই থাকে। ট্রেড করার জন্য এই সময়টা কিছুটা বোরিং লাগতে পারে। অনেক নতুন ট্রেন্ড তৈরি হয় এই সময়ে, কিন্তু অনেক ট্রেডাররাই ট্রেন্ড কনফারমেশনের জন্য লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশনের জন্য অপেক্ষা করে।
লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপঃ
এই সেশন ওভারল্যাপ হল ট্রেড করার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময় ট্রেডাররা সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে মার্কেটের দিকে মনোনিবেশ করে। এই সেশন ওভারল্যাপ হল দিনের সবচেয়ে ব্যাস্ত সময়, কারন ২টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ট্রেডিং সেন্টার লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই সময় ওপেন থাকে।
এই সময় মার্কেটে অনেক বড় বড় মুভমেন্ট দেখা যায় বিশেষ করে যখন আমেরিকা এবং কানাডা থেকে নিউজ-রিপোর্টগুলো প্রকাশিত হয়। ইউরোপ থেকে দেরিতে প্রকাশ হওয়া নিউজগুলোও ভালো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। যদি লন্ডন সেশনে কোন ট্রেন্ড তৈরি হয়, তবে বেশিরভাগ সময় নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপের সময় তা কন্টিনিউ করতে দেখি। কারন আমেরিকান ট্রেডাররা সেদিন আগে কি হয়েছিল তা জেনে ট্রেড করতে ঝাপিয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ সময় পূর্বের ট্রেন্ড অনুসরন করে। এই সেশন ওভারল্যাপ শেষ হবার পর পরই দেখা যায় মার্কেটে মুভমেন্ট অনেক কমে যায়, কারন অনেক ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষে তাদের ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
ট্রেড করার জন্য সপ্তাহের সেরা দিনগুলোঃ
বন্ধুটি আমাকে বলল, সবশেষে যা বোঝা গেল, তা হল লন্ডন সেশনই হল ফরেক্স মার্কেটের সবচেয়ে ব্যাস্ততম সেশন। আর তারসাথে যদি নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু ট্রেড করার জন্য কি বিশেষ কোন ভালো দিন রয়েছে? আমি তাকে বললাম হ্যাঁ। কিছু বিশেষ দিন রয়েছে যে দিনগুলোতে মার্কেট অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশীই মুভ করে।
সপ্তাহের কোন দিনগুলোতে গড়ে কোন পিপস মুভমেন্ট হয় সেটা আমি ত্রিভুজকে এই চার্টের মাধ্যমে দেখাইঃ
ওপরের চার্ট থেকে দেখা যায় যে, সপ্তাহের মাঝের দিনগুলোতেই মুভমেন্ট বেশী হয়। সপ্তাহের এই দিনগুলোতেই সবচেয়ে বেশী পিপস মুভমেন্ট দেখা যায়। অনেক সময় দেখা যায় সোমবার অনেক জায়গায় ব্যাংক হলিডে থাকে, নিউজ কম রিলিজ হয় কিংবা ট্রেডাররা নতুন সপ্তাহে কোনদিকে ট্রেন্ড মোড় নিবে তা ঠিক করতে না পেরে ট্রেড কম করে। ওপরদিকে শুক্রবার অনেকেই বিকেলের পর ট্রেড করে না পরেরদিন মার্কেট হলিডে থাকায়। সেই অর্থে শুক্রবার মার্কেট বলা যায় অর্ধেক সময় অ্যাকটিভ থাকে।
এখানে অনেক তথ্য বিভিন্ন স্থান থেকে নেওয়া হয়েছে। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আপনাদের আশানুরুপ সারা পেলে এর ৪র্র্র্র্থ পর্র্ টি দেওয়ার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ
1. Reuters: এ পর্যন্ত এটি
বিশ্বে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফরেক্স নিউজ প্রদানকারী সাইট ।http://www.reuters.com/2.
Bloomberg: এটি আরেকটি নির্ভরযোগ্য ফরেক্স নিউজ প্রদানকারী সাইট। এটি বিভিন্ন
ক্যাটাগরিতে বিভক্ত তাই সহজেই গুরুত্বপূর্ণ আর্ন্তজাতিক নিউজ খুজে বের করা যায়।http://www.bloomberg.com/
3. Forbes.com Breaking News: এটি পেইড সোস্
থেকে ফ্রী নিউজ প্রদান করে থাকে।http://www.forbes.com/
4. CNBC: এটি ফরেক্স ট্রেডারদের জন্য উচ্চ মানের আর্টিকেল প্রদান করে থাকে।
http://www.cnbc.com/
5. Business Week: এটি খুবই প্রফেশনাল অ্যানালাইসিস প্রদান করে থাকে, কিন্তু একটু পুরাতন মডেল।
http://www.businessweek.com/
আমি অবশ্যই সেখানে একটি ট্রেড নিবো যেখানে ৩০পিপস রিস্ক এর বিপরীতে সর্বনিন্ম ১০০ টিপি থাকবে। তবে টার্গেট ও অপেক্ষায় থাকি ২০০-৬০০ পিপস এর ট্রেন্ড ধরার।
আর যেখানে ৩০পিপস রিষ্ক নিয়ে ৩০-৫০-৭০ পিপস টিপি টার্গেট থাকে, সেই ট্রেড কে আমি অবশ্যই এড়িয়ে চলি।
Sites to sign up:
ClickSure: http://tr.im/52nyl
GetResponse: http://tr.im/52nyn
Payoneer: http://tr.im/52nys
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন